Dhaka ১০:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চুপ কথার গল্প!

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৮:২১:৫৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ নভেম্বর ২০২২
  • ৫৫৬ Time View
চুপ কথার গল্প!
আহমেদ হানিফ।
সৃষ্টি জগতে শুধু মানুষেরই বোধগম্য ভাষার ব্যবহার করতে দেখা যায়, ভাষার ব্যবহারের মাধ্যমে মানুষের মনস্তাত্ত্বিক চিন্তার প্রতিফলন ঘটে।ভাষার যথার্থ ব্যবহারে যেমন কথা হয়ে উঠে শব্দ গুলো তেমনি গল্পের আয়োজনে চয়িত হয় নানান শব্দের সমাহার।
মানুষ কথা বলে বহু কথা, নানান ঢঙে কথা বলে মানুষ জানান দেয় মননের উৎকর্ষ চিন্তার রসদ সংগ্রহের আয়োজন।
এই কথা বলতে পারাদের দলের মানুষের মাঝে চয়িত হয় নানান গল্প-
বেদনার, ভালোলাগার, না পাওয়ার, ভালোবাসার।
কথাদের সুরে সুরারোপিত হয় মানুষের হাসি কান্নার আওয়াজ, কথাদের মেলবন্ধনের মাঝে হারাতে চায় মানুষ তার নিজের অনুভূতি গুলো।
সৃষ্টির এক রহস্যময় জিনিস বলতে পারি ভাষা যার প্রয়োগে কথারা রূপ পায় মানুষের মননের চিন্তায়।
তাইতো মানুষ চায় তার অনুভূতি গুলো জানান দিতে, বলতে চায় তার চিন্তার জগতের কথা, বর্তমান ও অতীতের নানা গল্প।
গল্পে গল্পে মানুষ তার স্বকীয়তা জানান দেয়, কথাদের সাথে মাঝেসাঝে দ্রোহ করে চুপ থাকে।নতুন সঙ্গীর সান্নিধ্যে আসলে কথার পসরা সাজায়, হারিয়ে যেতে চায় অতীতে-ভবিষ্যতে, অতলে-অন্তরীক্ষে।
জীবনের গল্প জানাতে খোঁজে সঙ্গী যে তাকে শুনবে, বুঝবে আর অনুভব করবে।
আমাদের সমাজের মানুষের মাঝেও কথাদের বেশ কদর, কথায় সম্পর্ক বাঁচে কথায় নষ্ট হয়ে পড়ে বহুদিনের সখ্যতা।
মানুষের জীবনে তাই কথা বলার ও কথা শুনার মানুষের বড্ড প্রয়োজন পড়ে।
কথারা বাঁচিয়ে রাখে সত্তাকে, স্বপ্ন বুনতে সাহায্য করে আগামী দিনের বাঁচার বুনিয়াদ হতে।
তবে, আজ কথাদের গল্পে শুনাবো।
এক চুপ কথার গল্প!
হ্যাঁ, চুপ কথার গল্প!
আজব লাগছে হয়তো চুপ কথা আবার কি?
এই চুপ কথায় আবার গল্প হয় কি করে?
আজব মানুষের পাল্লায় পড়েছে শ্রোতা তাই শুনতে হচ্ছে এমন চুপ কথার গল্প-
আচ্ছা ভণিতা বাদ দিয়ে শুরু করা যাক এই চুপ কথার গল্প-
এক বুড়ি মায়ের গল্প-
সন্ধ্যার আকাশে গুটিকয়েক তারাদের আনাগোনা শুরু হয়ে গেলো, জানালার পাশ হতে শীতল বাতাস প্রবেশ করছে ঘরে।
মৃদু বাতাসের প্রবাহ শরীরে লাগতেই চশমাটা খুঁজে নিয়ে জানালার গ্রিল ধরে দাঁড়িয়ে রইলেন  জমিরন।
ষাটোর্ধ বিধবা জমিরন বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যায় জর্জরিত, পাঁচ ছেলে-মেয়ের সাংসারে স্বামীকে হারিয়েছে আজ হতে আট বছর আগে।
হুমায়ূন সাহেব মারা যাওয়ার পর থেকেই মূলত কথা বলার সঙ্গী হারিয়ে বসেছে জমিরন।কথা বলার মানুষের অভাব ঠিকই বুঝতে পারে জমিরন।
দেওয়ালের পাশের আম গাছটায় কত পাখি আসে আবার চলে যায় তাদের গন্তব্যে,যখন পাখিদের কুজন কানে আসে তখন জমিরন উদাস হয়ে শুনতে থাকে পাখিদের , পাখিরা কি বলে বুঝতে চায় জমিরন-
জানতে চায় পাখিদের মনের অনুভূতি গুলো।
জমিরন হতাশ হয়ে পড়ে পাখিদের কথাতো আর বুঝতে পারে না সে, চিন্তা করে বলে যাদের কথাতো বুঝতে পারি তারাতো আমায় বুঝে না।তিন মেয়ের শ্বশুর বাড়ি বহুদূরে বছরে একবার কিংবা দুইবার আসে তারা তাদেরতো সংসার ছেলে-মেয়ে আছে তাই তারাও হয়তো ভুলে বসে বুড়ি মায়ের কথা।
জমিরন তেমন একটা খোঁজও পায়না মেয়ে গুলো কেমন আছে,
কি করছে?
জমানো কথা বুকে চাপিয়ে রাতের পর রাত কাটাতে হয় জমিরনের।
আর দুই ছেলে তারা এক ছাদের নিচে থেকেও যেন বহুদূরের প্রতিবেশি।প্রাসাদসম বাড়ির কোনার ঘরটায় মা নামক প্রাণিটার বাস এইটুকু তাদের জানা আছে,
মায়ের খাতির-যত্নের  জন্য কাজের মেয়ে আছে আর কি চাই, ঠিক মতো খাবার, ঔষধ পাঠাচ্ছে নিয়মিত কাজের মেয়েইতো সব কিছু ঠিকঠাক করছে, কেমন আছে বলছে এতেই দু’ভাই খুশি।
নাতিনাতনিদের মিশতে দেয় না বউরা, অশিক্ষিত বুড়ির কাছ থেকে আবার কি সব শেখে বসে, সমাজে মুখ দেখাবে কি করে।
কোনার ঘরটাতে কাজের মেয়েটা ছাড়া কারো গমন নেই জমিরন একা একা মরার দিন গুনছে।
গতরাতে ঘুম হয়নি তার সারারাত ধরে খাটে এপাশ-ওপাশ করে কাটিয়েছেন আর ভেবেছেন কাদের জন্য এত কষ্ট করে সংসারটা গড়ে তুলেছেন।
কত আদরের ছেলে-মেয়ে গুলো তাদের সামান্য কিছু হলেই চিন্তায় জমিরনের ঘুম আসতো না, সারারাত তাদের সেবাযত্ন করতেন।
আজ তারা বড় মানুষ, তাদের অশিক্ষিত বুড়ি মায়ের আর কদর নেই।
প্রয়োজন পড়ে না তাদের এই মায়ের যে মা তিল তিল করে মানুষ করেছে তাদের।
আম গাছটায় পাখিদের কিচিরমিচির শুরু হয়ে গেলো জমিরন চশমাটা চোখে লাগিয়ে জানালার পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে তাদের কথা শুনছে,
মনোযোগ দিয়ে দেখতে লাগলো সমবেত হয়ে কিভাবে পাখিরা মনের কথা গুলো বলছে, শুনছে।
জমিরনের চোখ বেয়ে কান্নার অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে, আঁচলের কোনা দিয়ে চোখের পানি মুছতে মুছতে বলতে লাগলো মনের দুঃখের কথা, চারদেওয়াল ভেদ করে এই কথা গুলো কারো কর্ণগোচর হয় না।
ইট পাথরের দালানে বন্দিজীবনে কে শুনে তার কথা-
মানুষের শেষ বয়সটাতে গল্প বলার ব্যামোতে পেয়ে বসে, মানুষ তার সহচরকে শুনাতে থাকে তার জীবনের গল্প, বেড়ে উঠার গল্প, বেঁচে থাকার গল্প।
কিন্তু জমিরনের বেলায় ব্যামো থাকলেও গল্প শুনার মানুষের বড্ড অভাব, মানুষের অগোচরে থেকে থেকে আর কি করারই আছে।
গল্প কাকে শুনাবে?
কে শুনবে?
একা একা তাই চারদেওয়ালকে শুনিয়ে যাচ্ছে সবকিছু, ভালোলাগার, বেঁচে থাকার, অতীত জীবনের নানান খোশগল্প।
হয়তো আর অল্পকিছু সময় পৃথিবীতে তার বেঁচে থাকা হবে কিন্তু অতৃপ্ত আত্মা কিভাবে শান্তি পাবে বুঝে উঠতে পারে না জমিরন।
তার গল্পগুলো হয়ে উঠছে চুপ কথার গল্প,
কেউ শুনে না কেউ বলে না কেমন আছেন মা?
দাদি কিংবা আম্মাজান।
পাখিদের চলে যেতে দেখে আবার খাটে এসে শুয়ে পড়লেন জমিরন।
নিত্যকার মতোই আবদ্ধ ঘরে না বলা গল্প গুলো সঙ্গী করে একদিন ঠিকই হারিয়ে যাবেন জমিরন।
শত জমিরনের সমাজটায় একটু কথা বলার মানুষ চাই, কথা শুনার মানুষ চাই।
বেঁচে থাকার প্রেরণা জোগাতে গল্প শুনার সঙ্গী চাই।
নতুন দিনের গল্প বলার জন্য রসদ সংগ্রহে ব্যস্ত মানুষের সহবস্থান চাই তবেই আবদ্ধ ঘর হতে জমিরনরা মুক্তি পাবে।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

বোয়ালমারীতে চার বছর কর্মস্থলে না গিয়েও বেতন ভাতা নিচ্ছে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ঝুমা !

চুপ কথার গল্প!

Update Time : ০৮:২১:৫৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ নভেম্বর ২০২২
চুপ কথার গল্প!
আহমেদ হানিফ।
সৃষ্টি জগতে শুধু মানুষেরই বোধগম্য ভাষার ব্যবহার করতে দেখা যায়, ভাষার ব্যবহারের মাধ্যমে মানুষের মনস্তাত্ত্বিক চিন্তার প্রতিফলন ঘটে।ভাষার যথার্থ ব্যবহারে যেমন কথা হয়ে উঠে শব্দ গুলো তেমনি গল্পের আয়োজনে চয়িত হয় নানান শব্দের সমাহার।
মানুষ কথা বলে বহু কথা, নানান ঢঙে কথা বলে মানুষ জানান দেয় মননের উৎকর্ষ চিন্তার রসদ সংগ্রহের আয়োজন।
এই কথা বলতে পারাদের দলের মানুষের মাঝে চয়িত হয় নানান গল্প-
বেদনার, ভালোলাগার, না পাওয়ার, ভালোবাসার।
কথাদের সুরে সুরারোপিত হয় মানুষের হাসি কান্নার আওয়াজ, কথাদের মেলবন্ধনের মাঝে হারাতে চায় মানুষ তার নিজের অনুভূতি গুলো।
সৃষ্টির এক রহস্যময় জিনিস বলতে পারি ভাষা যার প্রয়োগে কথারা রূপ পায় মানুষের মননের চিন্তায়।
তাইতো মানুষ চায় তার অনুভূতি গুলো জানান দিতে, বলতে চায় তার চিন্তার জগতের কথা, বর্তমান ও অতীতের নানা গল্প।
গল্পে গল্পে মানুষ তার স্বকীয়তা জানান দেয়, কথাদের সাথে মাঝেসাঝে দ্রোহ করে চুপ থাকে।নতুন সঙ্গীর সান্নিধ্যে আসলে কথার পসরা সাজায়, হারিয়ে যেতে চায় অতীতে-ভবিষ্যতে, অতলে-অন্তরীক্ষে।
জীবনের গল্প জানাতে খোঁজে সঙ্গী যে তাকে শুনবে, বুঝবে আর অনুভব করবে।
আমাদের সমাজের মানুষের মাঝেও কথাদের বেশ কদর, কথায় সম্পর্ক বাঁচে কথায় নষ্ট হয়ে পড়ে বহুদিনের সখ্যতা।
মানুষের জীবনে তাই কথা বলার ও কথা শুনার মানুষের বড্ড প্রয়োজন পড়ে।
কথারা বাঁচিয়ে রাখে সত্তাকে, স্বপ্ন বুনতে সাহায্য করে আগামী দিনের বাঁচার বুনিয়াদ হতে।
তবে, আজ কথাদের গল্পে শুনাবো।
এক চুপ কথার গল্প!
হ্যাঁ, চুপ কথার গল্প!
আজব লাগছে হয়তো চুপ কথা আবার কি?
এই চুপ কথায় আবার গল্প হয় কি করে?
আজব মানুষের পাল্লায় পড়েছে শ্রোতা তাই শুনতে হচ্ছে এমন চুপ কথার গল্প-
আচ্ছা ভণিতা বাদ দিয়ে শুরু করা যাক এই চুপ কথার গল্প-
এক বুড়ি মায়ের গল্প-
সন্ধ্যার আকাশে গুটিকয়েক তারাদের আনাগোনা শুরু হয়ে গেলো, জানালার পাশ হতে শীতল বাতাস প্রবেশ করছে ঘরে।
মৃদু বাতাসের প্রবাহ শরীরে লাগতেই চশমাটা খুঁজে নিয়ে জানালার গ্রিল ধরে দাঁড়িয়ে রইলেন  জমিরন।
ষাটোর্ধ বিধবা জমিরন বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যায় জর্জরিত, পাঁচ ছেলে-মেয়ের সাংসারে স্বামীকে হারিয়েছে আজ হতে আট বছর আগে।
হুমায়ূন সাহেব মারা যাওয়ার পর থেকেই মূলত কথা বলার সঙ্গী হারিয়ে বসেছে জমিরন।কথা বলার মানুষের অভাব ঠিকই বুঝতে পারে জমিরন।
দেওয়ালের পাশের আম গাছটায় কত পাখি আসে আবার চলে যায় তাদের গন্তব্যে,যখন পাখিদের কুজন কানে আসে তখন জমিরন উদাস হয়ে শুনতে থাকে পাখিদের , পাখিরা কি বলে বুঝতে চায় জমিরন-
জানতে চায় পাখিদের মনের অনুভূতি গুলো।
জমিরন হতাশ হয়ে পড়ে পাখিদের কথাতো আর বুঝতে পারে না সে, চিন্তা করে বলে যাদের কথাতো বুঝতে পারি তারাতো আমায় বুঝে না।তিন মেয়ের শ্বশুর বাড়ি বহুদূরে বছরে একবার কিংবা দুইবার আসে তারা তাদেরতো সংসার ছেলে-মেয়ে আছে তাই তারাও হয়তো ভুলে বসে বুড়ি মায়ের কথা।
জমিরন তেমন একটা খোঁজও পায়না মেয়ে গুলো কেমন আছে,
কি করছে?
জমানো কথা বুকে চাপিয়ে রাতের পর রাত কাটাতে হয় জমিরনের।
আর দুই ছেলে তারা এক ছাদের নিচে থেকেও যেন বহুদূরের প্রতিবেশি।প্রাসাদসম বাড়ির কোনার ঘরটায় মা নামক প্রাণিটার বাস এইটুকু তাদের জানা আছে,
মায়ের খাতির-যত্নের  জন্য কাজের মেয়ে আছে আর কি চাই, ঠিক মতো খাবার, ঔষধ পাঠাচ্ছে নিয়মিত কাজের মেয়েইতো সব কিছু ঠিকঠাক করছে, কেমন আছে বলছে এতেই দু’ভাই খুশি।
নাতিনাতনিদের মিশতে দেয় না বউরা, অশিক্ষিত বুড়ির কাছ থেকে আবার কি সব শেখে বসে, সমাজে মুখ দেখাবে কি করে।
কোনার ঘরটাতে কাজের মেয়েটা ছাড়া কারো গমন নেই জমিরন একা একা মরার দিন গুনছে।
গতরাতে ঘুম হয়নি তার সারারাত ধরে খাটে এপাশ-ওপাশ করে কাটিয়েছেন আর ভেবেছেন কাদের জন্য এত কষ্ট করে সংসারটা গড়ে তুলেছেন।
কত আদরের ছেলে-মেয়ে গুলো তাদের সামান্য কিছু হলেই চিন্তায় জমিরনের ঘুম আসতো না, সারারাত তাদের সেবাযত্ন করতেন।
আজ তারা বড় মানুষ, তাদের অশিক্ষিত বুড়ি মায়ের আর কদর নেই।
প্রয়োজন পড়ে না তাদের এই মায়ের যে মা তিল তিল করে মানুষ করেছে তাদের।
আম গাছটায় পাখিদের কিচিরমিচির শুরু হয়ে গেলো জমিরন চশমাটা চোখে লাগিয়ে জানালার পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে তাদের কথা শুনছে,
মনোযোগ দিয়ে দেখতে লাগলো সমবেত হয়ে কিভাবে পাখিরা মনের কথা গুলো বলছে, শুনছে।
জমিরনের চোখ বেয়ে কান্নার অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে, আঁচলের কোনা দিয়ে চোখের পানি মুছতে মুছতে বলতে লাগলো মনের দুঃখের কথা, চারদেওয়াল ভেদ করে এই কথা গুলো কারো কর্ণগোচর হয় না।
ইট পাথরের দালানে বন্দিজীবনে কে শুনে তার কথা-
মানুষের শেষ বয়সটাতে গল্প বলার ব্যামোতে পেয়ে বসে, মানুষ তার সহচরকে শুনাতে থাকে তার জীবনের গল্প, বেড়ে উঠার গল্প, বেঁচে থাকার গল্প।
কিন্তু জমিরনের বেলায় ব্যামো থাকলেও গল্প শুনার মানুষের বড্ড অভাব, মানুষের অগোচরে থেকে থেকে আর কি করারই আছে।
গল্প কাকে শুনাবে?
কে শুনবে?
একা একা তাই চারদেওয়ালকে শুনিয়ে যাচ্ছে সবকিছু, ভালোলাগার, বেঁচে থাকার, অতীত জীবনের নানান খোশগল্প।
হয়তো আর অল্পকিছু সময় পৃথিবীতে তার বেঁচে থাকা হবে কিন্তু অতৃপ্ত আত্মা কিভাবে শান্তি পাবে বুঝে উঠতে পারে না জমিরন।
তার গল্পগুলো হয়ে উঠছে চুপ কথার গল্প,
কেউ শুনে না কেউ বলে না কেমন আছেন মা?
দাদি কিংবা আম্মাজান।
পাখিদের চলে যেতে দেখে আবার খাটে এসে শুয়ে পড়লেন জমিরন।
নিত্যকার মতোই আবদ্ধ ঘরে না বলা গল্প গুলো সঙ্গী করে একদিন ঠিকই হারিয়ে যাবেন জমিরন।
শত জমিরনের সমাজটায় একটু কথা বলার মানুষ চাই, কথা শুনার মানুষ চাই।
বেঁচে থাকার প্রেরণা জোগাতে গল্প শুনার সঙ্গী চাই।
নতুন দিনের গল্প বলার জন্য রসদ সংগ্রহে ব্যস্ত মানুষের সহবস্থান চাই তবেই আবদ্ধ ঘর হতে জমিরনরা মুক্তি পাবে।